বাউফল প্রতিবেদক ॥ বাউফলের গোলাবাড়ি থেকে কালিশুরী হয়ে বরিশালের চর কাউয়ার আন্তঃআঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ চলছে ধীর গতিতে। ফলে জনসাধারণ সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় মেসার্স মাহফুজ খান এন্টারপ্রাইজের নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি টাকা। কবে নাগাদ সড়কটির কাজ শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে সংশ্লিষ্টরা কেউ বলতে পারছেন না।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা, জেলা ও বিভাগের সঙ্গে জনগণের সহজে যাতায়াতের সুবিধার্থে বাউফল উপজেলার গোলাবাড়ি থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার গোমা-চরামদ্দি হয়ে বরিশাল পর্যন্ত সড়ক বর্ধিত করণসহ পানি নিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সেই অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ২০১৮-২০১৯ইং অর্থ বছরে গোলাবাড়ি থেকে কালিশুরী কুমারখালী পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে মোট ৪ ফুট বর্ধিত করে ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কটির পুন:নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৫২ কোটি টাকা।
অভিযোগ রয়েছে, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাহফুজ খান এন্টারপ্রাইজ এক বছর আগে (গত বছর জুন মাসে) সড়কটির গোলাবাড়ি, নুরাইনপুর ও কালিশুরী পর্যন্ত দুই পাশে বর্ধিত অংশের মাটি কেটে স্যান্ড ফিলিং করে দীর্ঘদিন কাজটি ফেলে রাখে। এরপর চলতি বছর ওই সড়কের দুই পাশে এজিং ও সাব বেইজের কাজ শুরু করে।
ঠিকমত বালু ও পাথরের মিশ্রণ ঢেলে রোলিং না করায় সাব বেইজের বিভিন্ন অংশ খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন উপসহকারী প্রকৌশলী জানান, ওই সড়কের যেসব অংশে সাব বেইজে খানাখন্দ হয়েছে, মূলত সেই অংশে পাথরের পরিমাণ কম দেয়া হয়েছে। বালুর পরিমাণ বেশী হওয়ায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ভোগান্তি হচ্ছে। বর্তমানে সড়কটির নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে চলায় বিশেষ করে মদনপুরা, কালিশুরি, ধুলিয়া ও কেশবপুর ইউনিয়নের মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। নুরাইনপুর এলাকার আবদুল খালেক, রমিজ উদ্দিন ও রিপন বিশ্বাসসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, এভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নির্মাণ কাজ চলতে থাকলে আগামী এক বছরেও এই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবদুর রহিম বলেন, ‘সিডিউল অনুযায়ী সড়কের কাজ দ্রত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। বর্ষার কারণে কাজের কিছুটা অসুবিধা হয়েছে’। এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ সামস মোকাদ্দেছ বলেন, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করলে ঠিকাদারের লোকসান হবে। এখন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, তাই বৃষ্টির পানিতে বালু ধুয়ে গেলে পাথর পড়ে থাকবে। তিনি বলেন, পাথর সংকট ও করোনার কারণে নির্মাণ কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সড়কটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
Leave a Reply